শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সমুদ্রকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের বুঝতে হবে, মহাসাগর ও তার বিপুল সম্পদ সংরক্ষণে আমরা যত বেশি বিনিয়োগ করবো, যত বেশি পদক্ষেপ নেবো তা সামগ্রিকভাবে দীর্ঘমেয়াদি সুফল বয়ে আনবে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইণ্টারকণ্টিনেণ্টালে তৃতীয় ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রী পর্যায়ের ‘সুনীল অর্থনীতি সম্মেলন’ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের দূষণসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অপ্রিয় হলেও সত্যি যে মনুষ্য-সৃষ্ট নানা কারণে আমাদের সাগর আজ ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন।
তিনি বলেন, মাত্রাতিরিক্ত সম্পদ আহরণ, পরিবেশ দূষণ, তেল নিঃসরণ, প্লাস্টিক বর্জ্য দ্বারা দূষণ, শব্দ দূষণ ও সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তন এসবের অন্যতম কারণ। এরফলে সাগর/মহাসাগরের উষ্ণতা বাড়ছে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। ‘শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ আইওআরএ (IORA) সদস্যভুক্ত দেশগুলো সুনামি ও সাইক্লোনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দ্বারাও আক্রান্ত হয়।’
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৈশ্বিক উষ্ণায়ন উদ্ভিদ ও প্রাণিজগৎকে বিপদগ্রস্ত করে তুলছে এবং মানবজাতিকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আসন্ন বিপর্যয় মোকাবেলায় সবাই মিলে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাগর ও মহাসাগর গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রায় ৩০ শতাংশ এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সৃষ্ট অতিরিক্ত তাপের প্রায় ৯০ শতাংশই শোষণ করে। Marine Ecology (সমুদ্র বাস্তুতন্ত্র) ধ্বংস হলে মানবজাতির অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়বে। অতিসত্বর সবাই মিলে এই বিপর্যয় মোকাবেলার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
ক্ষতিকর উপায়ে সমুদ্র সম্পদ আহরণে বাংলাদেশের নেয়া ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রের জৈবসম্পদ সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকার মৎস্য আহরণের সব ধরনের ক্ষতিকারক পদ্ধতি ও উপায়কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং অন্যান্য অপরাধ দমনেও কার্যকর আইন প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, শান্তি, নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। খেয়াল রাখতে হবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে গিয়ে যেন সমুদ্রের সুস্থ পরিবেশ বিঘ্নিত না হয়। তাই আমাদের সুনীল অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি সুনীল চিন্তাও করতে হবে। সে লক্ষ্যে সমন্বিত, লাভজনক ও সর্বোপরি সমুদ্র সংরক্ষণমূলক নীতি নির্ধারণ ও সে অনুযায়ী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।